বাচ্চাদের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় - বিস্তারিত
বাচ্চাদের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়
প্রতিটি শিশু তার পিতামাতার কাছে অমূল্য সম্পদ। শিশুকে কিভাবে সুস্থ রাখা যায় হাসিখুশি রাখা যায় তা নিয়ে চিন্তার শেষ থাকেনা প্রত্যেক পিতা-মাতার। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই বাচ্চাদের বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। যার মধ্যে অন্যতম হলো বাচ্চাদের পেট ফাঁপা। যা নিয়ে প্রত্যেক পিতা-মাতার দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। চলুন আজ জেনে নিই কি করলে বাচ্চাদের পেট ফাঁপার মত রোগ থেকে আমরা বাচ্চাদের সুরক্ষা করতে পারি - বাচ্চাদের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়।
বাচ্চাদের পেট ফাঁপার লক্ষণ:
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পেট ফাঁপলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। যার সাহায্যে সনাক্ত করা যায় যে বাচ্চার পেট ফাঁপা হয়েছে। পেট ফাঁপা হলে অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা খাওয়া-দাওয়া করতে পারে না। যেহেতু বাচ্চারা বলতে পারে না যে তাদের সঠিক কি সমস্যা হয়েছে সে কারণে বাচ্চারা কান্না করে থাকে। তাই আমাদের বাচ্চাদের পেট ফাঁপার লক্ষণ সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত।
বাচ্চাদের পেট ফাঁপার লক্ষণ:
- অতিরিক্ত কান্না করা।
- খাবার খেতে না চাওয়া।
- তলপেট শক্ত হয়ে যাওয়া।
- পেট ফোলা।
- অতিরিক্ত বায়ু ত্যাগ ইত্যাদি।
বাচ্চাদের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়:
বাচ্চাদের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় আলোচনা করা হলো। শিশুকে সঠিক পদ্ধতিতে দুধ পান করাতে হবে। অর্থাৎ শিশুকে দুধ পান করানোর সময় মাথা পেট থেকে কমপক্ষে এক হাত উঁচুতে থাকবে। আর শিশুকে বিছানায় রেখে দুধ না খাওয়ানোয়াই উত্তম।
প্রত্যেক মায়ের উচিত শিশুকে কমপক্ষে ছয় মাস পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো। কারণ বাইরে থেকে ক্রয় করা দুধে ক্ষতিকর উপাদান থাকে যা বড়দের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ না হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি ফলপ্রসূ হয়ে থাকে যার কারণে তাদের পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হয়।
শিশুকে দুধ খাওয়ানোর পর পরই শুয়ে দেওয়া উচিত নয় কমপক্ষে পাঁচ মিনিট কাঁধে করে নিয়ে হাঁটা চলা করা উচিত।
মায়েদের লক্ষ রাখতে হবে যে সমস্ত খাবার খেলে শিশুদের গ্যাস হতে পারে বা অন্যান্য সমস্যা হতে পারে সেসব খাবার পরিহার করায় উত্তম। কারণ সে সমস্ত খাবার খেলে শিশুদের সমস্যা হতে পারে।
শিশুদের কিছুক্ষণ উপুড় করে শুয়ে রাখলেও পেটের গ্যাস অনেকটা কমে যায়।
শিশুর শরীর হালকা গরম পানি দিয়ে মুছিয়ে দিলে বা গোসল করিয়ে দিলে গ্যাস বের হওয়াটা ত্বরান্বিত হয়।
বাচ্চাদের পেট ফাঁপার কারণ?
প্রতিটি নবজাতক শিশুদের পাকস্থলী দুর্বল হয়ে থাকে। শিশুদের হজম শক্তি কম থাকার কারণে খাবার খাওয়ানো হলে অনেক সময় পেটে গ্যাস সৃষ্টি হয়। এর ফলে তাদের পেট ফাঁপতে পারে।
শিশুদের বাড়তি খাবার খাওয়ানো শুরু করার সময়ও তাদের পেট ফাঁপতে পারে। বাইরে থেকে ক্রয় করা দুধ খাওয়ালেও তাদের পেট ফাঁপতে পারে। এছাড়াও ফিডারে দুধ খাওয়ালেও তাদের পেট ফাঁপতে পারে।
শিশুর পেটে দুর্গন্ধযুক্ত বাতাস ঢুকলে তাদের পেট ব্যথা হতে পারে, পেট কামড়াতে পারে, পেট মোচরাতে পারে ।এর ফলে তারা অতিরিক্ত কান্না করে। আর এ সমস্যা বেশি দেখা দিতে পারে
সন্ধ্যাবেলা ।
মায়ের শারীরিক সমস্যা থাকলেও শিশুর পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে যেমন - মায়ের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি ।
বাচ্চাদের পেট ফাঁপা হলে করণীয়?
বাচ্চাদের পেটের গ্যাস বের করতে হলে প্রথমে উপরে ও পরে নিচে পেটে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে এ সময় খেয়াল রাখতে হবে দুই থেকে তিন বারের বেশি এই ম্যাসাজ করা যাবে না।
বাচ্চাদের পেটে গ্যাস হলে তাদের ও অস্বস্তি শুরু হয়। আর এই অস্বস্তি কমাতে হলে তাদের পেটে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করতে হবে। ফলে এই গ্যাস অন্ত্রের মাধ্যমে বায়ুদার দিয়ে বেরিয়ে আসবে। এ সময় আবার পেটের উপরের অংশে মেসাজ করতে হবে।
বাচ্চাদের পেট ফাঁপার ঔষধ:
বাচ্চাদের পেট ফাঁপা ঔষধের মধ্যে যেগুলো অন্যতম সেগুলোর মধ্যে কিছু নীচে দেওয়া হল। যা বাচ্চাদের পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করে।
- Flacol Tablet
- Agerd capsule
- Domin
- Omidon Tablet
এছাড়াও আরো অনেক ওষুধ রয়েছে যেগুলো বাচ্চাদের পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করে উপরে কয়েকটি নাম দেওয়া হল। তবে এর পাশাপাশি বাচ্চাদের পেট ফাঁপা দূরীকরণে ঘরোয়া উপায় ও অনেক কার্যকারী।
শেষ কথা:
এরই মাঝে আমরা উপস্থাপন করে ফেলেছি বাচ্চাদের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। এই আর্টিকেলটিতে বাচ্চাদের পেট ফাঁপার সকল খুঁটি-নাটি উপস্থাপন করেছি যদি কোন বিষয়বস্তু বাদ পড়ে যায় অনুগ্রহ করে কমেন্টে জানাবেন। এত কষ্ট করে লেখা আর্টিকেলটি যদি আপনাদের সামান্য উপকারী আসে তাহলে আমরা সার্থক। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে ভালো থাকবেন কথা হচ্ছে অন্য কোন আর্টিকেলে….।